শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের ছেলেকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার ওসি হিসেবে দায়িত্বরত আবুল হাসানকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকালে তাকে কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে ঢাকা থেকে আসা একটি পুলিশের দল তাকে ঢাকা নিয়ে যায় বলে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের উপপরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে ইমাম হাসান তাইমকে গুলি করে হত্যার মামলায় আবুল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি টেকনাফে অবস্থান করছেন তা নিশ্চিত হওয়ার পর গ্রেপ্তার করে জেলা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়। বিষয়টি ঢাকায় সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছিল এবং সেখান থেকে পুলিশের একটি দল কক্সবাজারে আসেন। তারাই আবুল হাসানকে ঢাকা নিয়ে গেছেন বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
তবে আবুল হাসানকে কোন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল পুলিশের পক্ষে নিশ্চিত করেন। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছেন, তীব্র গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর দেশের প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল হয়। যার ধারাবাহিকতায় যাত্রাবাড়ী থানা থেকে টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৬ এপিবিএনে বদলি করা হয় আবুল হাসানকে। সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নিহত তাইম নারায়ণগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এম. ডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ২০ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।
এ ঘটনায় ২০ আগস্ট তাইমের মা পারভীন আক্তার যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন। যেখানে পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীম, এসি তানজিল আহমেদসহ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। এই মামলাতেই যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ২০ জুলাই দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। সেসময় তাইম তার দুই বন্ধুর সঙ্গে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় চা খেতে যায়। সেখানে কিছু আন্দোলনকারী বিক্ষোভ করছিল। তখন ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেনসহ অন্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি ছোড়ে।
এজাহারে বলা হয়েছে, “এতে প্রাণ ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এলোপাতাড়ি ছোটাছুটি করতে থাকে। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের সামনের সাটার টেনে দেয়। কিন্তু সাটারের নিচের দিকে আধা হাত পরিমাণ জায়গা খোলা ছিল। এসময় সেখানে অবস্থানকারীদের পুলিশ টেনে বের করে।
“জাকির হোসেন গুলির থেকে বাঁচতে চাইলে সবাইকে দৌড় দিতে বলে। তখন তাইম সবার আগে দৌড় দেয়। জাকির গুলি করে। বিনা চিকিৎসায় তাইম সেখানেই মারা যায়।”
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply